Tuesday, August 27, 2019

বাংলা বানান ভুল সমস্যা দূর করবেন যেভাবে!

লিখন দক্ষতা


যারা নিজের বাংলা বানান ভুল সমস্যা নিয়ে চিন্তিত তারা একটু মনোযোগ দিয়ে স্মার্টলি বাংলা পড়লেই দেখতে পাবেন যে বাংলা বানান ভুল মূলত কয়েকটি উৎস থেকে হয়ে থাকে। তাই বাংলা পড়ার সময় মনোযোগ দিয়ে এই বিষয়গুলো মাথায় রাখলেই বাংলা বানান ভুল থেকে ধীরে ধীরে মুক্তি পাবেন। আমিও একসময় প্রচুর বাংলা বানান ভুল করতাম; এখন আমি প্রায় পুরোপুরি শুদ্ধ বাংলা লিখতে পারি। বানান ভুল সমস্যা হতে মুক্ত হতে তাই নিম্নের লিস্টটি দেখুন এবং বাস্তব জীবনে এর উপর আমল করুন।

উৎসসমূহ:
১. ি, ী
২. ু, ূ
৩. জ, য
৪. ষ, স, শ
৫. ণত্ব বিধান ও ষত্ব বিধান না মানা সংক্রান্ত ভুল
৬. যুক্তাক্ষর সংক্রান্ত
৭. ঁ এর ব্যবহার সংক্রান্ত
৮. "ফলা" এবং "কার" এর একত্রে ব্যবহার সংক্রান্ত
৯. রেফ (র্) এবং হস (্) সংক্রান্ত
১০. ঃ এর ব্যবহার সংক্রান্ত

ধন্যবাদ | ভালো থাকুন
মোঃ মেহেদী হাসান,
এমসিএএস গবেষক ও লেখক।

Monday, December 10, 2018

বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ : কী এবং কেনো?

ড. শামসুল আলম


গত ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখ প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় এখন থেকে ৮২ বছরে বাস্তবায়িতব্য ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে। অব্যাহত উন্নয়ন অভিযাত্রায় দেশজ এ মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং অনুমোদন দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনার ইতিহাসে অন্যতম মাইলফলক। নিরাপদ, জলবায়ু পরিবর্তন অভিঘাতসহিষ্ণু সমৃদ্ধশালী ব-দ্বীপ গড়ে তোলাই এ মহাপরিকল্পনার রূপকল্প। দেশ-বিদেশের সংশ্লিষ্ট সকল পেশাজীবী, পরিবেশবিদ, গবেষক, বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদসহ সকল স্তরের অংশীজনের ব্যাপক অংশগ্রহণ ও উন্মুক্ত মতামত গ্রহণের মাধ্যমে প্রণীত হয়েছে বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০।
মহাপরিকল্পনা দলিল প্রণয়নের কাজটি দেশজ বিশেষজ্ঞগণের পরামর্শ গ্রহণের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়েছে। নেদারল্যান্ডস্ বিশ্বে ব-দ্বীপ ব্যবস্থাপনায় সর্বজনস্বীকৃত অদ্বিতীয় একটি দেশ। তাদের কারিগরি সহায়তায় বাংলাদেশের পরিবর্তনশীল ব-দ্বীপ প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে সম্পূর্ণ দেশীয় পরিবেশ ও প্রতিবেশ বিবেচনায় এ পরিকল্পনা প্রণয়ন করাই যুক্তিযুক্ত বলে অনুভূত হয়েছে এবং আমরা সেভাবেই করেছি। এ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও পরবর্তী বাস্তবায়নে ৯টি মন্ত্রণালয়/বিভাগ যথা: পানিসম্পদ; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ; কৃষি; মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ; খাদ্য; নৌ-পরিবহন; ভূমি এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ সরাসরি যুক্ত ছিল। পানিসম্পদ খাতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত দেশীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রত্যক্ষ সহায়তা গ্রহণ করা হয়েছে এবং জাতীয় অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে ২৬ সদস্যের কারিগরি পরামর্শক দল কাজ করেছে। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/প্রতিষ্ঠান হতে ২৫ জন ফোকাল পয়েন্ট (যারা মূলত বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগের আওতায় মাঠ পর্যায়ে কর্মরত সংস্থা/প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করেছেন) কর্মকর্তাকে সার্বক্ষণিকভাবে এ পরিকল্পনা প্রণয়নের সাথে নিবিড়ভাবে যুক্ত রাখা হয়েছে। খসড়া পরিকল্পনাটি জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে ৯টি সেমিনার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ, পেশাজীবী, গবেষক, শিক্ষাবিদ, পরিবেশবিদ, পরিকল্পনাবিদ, স্থানীয় জনগণ এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনের নিকট উপস্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইন্সটিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশসহ (আইইবি) বিভিন্ন একাডেমিক ও পেশাজীবী পরিষদের সাথে আলোচনাপূর্বক তাদের মতামত ও পরামর্শ গ্রহণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার অংশীজনের মাধ্যমে মতামত নেওয়া হয়েছে।
এ মহাপরিকল্পনায় ক্রসকাটিং ইস্যুসমূহ অর্থাত্ পরস্পর সম্পর্কযুক্ত বিষয় হলো: টেকসই ভূমি ব্যবহার এবং স্থানিক পরিকল্পনা; কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি এবং জীবিকা; আন্তঃদেশীয় পানি ব্যবস্থাপনা; গতিশীল অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন ব্যবস্থা; সুনীল অর্থনীতি (Blue Economy); নবায়নযোগ্য শক্তি এবং ভূমিকম্প যেগুলোর প্রত্যেকটির জন্য প্রয়োজনীয় পৃথক কৌশল ও কারিগরি কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হয়েছে। সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ এ পরিকল্পনা প্রণয়নে জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সাথে সুষ্ঠু পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাসহ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতসমূহের সমন্বয় সাধন করেছে। একইসাথে, এ পরিকল্পনার সাথে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ও টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে।
এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী তিনটি সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের সময়সীমা অর্থাত্ ২০৩০ সালকে স্বল্পমেয়াদী হিসেবে বিবেচনা করে এর আওতায় প্রাথমিকভাবে ৮০টি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পসমূহ এ মহাপরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত জাতীয় পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট অভীষ্ট, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং সর্বোপরি এ মহাপরিকল্পনার মূল ভিত্তি ‘অভিযোজনভিত্তিক ব-দ্বীপ ব্যবস্থাপনা (Adaptive Delta Management)’ নীতির আলোকে বিশ্লেষণ পূর্বক গ্রহণযোগ্য হলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। একইসাথে ভবিষ্যেক মাথায় রেখে ‘সবুজ জলবায়ু তহবিল (Green Climate Fund)’ সহ অন্যান্য পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত বিভিন্ন তহবিল হতে অর্থায়ন প্রাপ্তির সুবিধার্থে ৩৪টি প্রকল্প প্রস্তাবকে বিশেষভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সরকারের আর্থিক সক্ষমতা, উন্নয়ন সহায়তা, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, প্রকল্পের সম্ভাব্যতা জরিপ, ইত্যাদি বিষয়ের আলোকে এতে নতুন প্রকল্প সংযোজন এবং বর্তমান তালিকা হতে বিয়োজনের সুযোগ রয়েছে। আর এ কারণেই এটি ফ্লেক্সিবল, অভিযোজনভিত্তিক, পরিবর্তনীয় ও সমন্বিত একটি মহাপরিকল্পনা।
এ মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের ক্ষেত্রে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হলো এ দেশে ‘পানি ব্যবস্থাপনা খাতে গত ৬০ বছরের কর্মকাণ্ডের’ পর্যালোচনামূলক সমীক্ষা। বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ অভিঘাতের মত বহিরারোপিত এবং আন্তঃসম্পর্কিত বিষয়সমূহকে বিবেচনা করে প্রথমবারের মত প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের বিষয়টিকে মূল কৌশল হিসেবে গ্রহণ করেছে, যা বর্তমানে এ খাতে বিশ্বব্যাপী কার্যকর কৌশল হিসেবে কারিগরি ও আর্থিক মানদণ্ডে স্বীকৃত। এ কৌশলটিই ‘অভিযোজনভিত্তিক ব-দ্বীপ ব্যবস্থাপনা’। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এ সমীক্ষায় পানিসম্পদ খাতে গত ছয় দশকে স্থাপিত বিভিন্ন স্থাপনাসমূহের পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে পর্যাপ্ত তহবিলের অভাব পরিদৃষ্ট হয়েছে। এ খাতে প্রয়োজনীয় তহবিলের অভাবে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত অবকাঠামোসমূহ তার পূর্ণ কর্মকাল সচল থাকে না। এজন্যই বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ তে মোট তহবিলের ২৫ শতাংশ ‘পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ’ খাতে রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে এ স্থাপনাগুলো কার্যকর রাখা এবং সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামো পরিবেশ বা জলবায়ু পরিবর্তনের মাপকাঠির সাথে বাস্তব দিক (যেমন অর্থনৈতিক চলক) সংযোগের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের অর্থনৈতিক অভিঘাত পরিমাপের বিষয়টি ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ তে প্রথমবারের মত বিবেচনা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে তিনটি অভ্যন্তরীণ চলক: অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান এবং দারিদ্র্য; এবং দুটি বাহ্যিক চলক: প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে বিবেচনা করা হয়েছে। ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ গ্রহণ না করলে পরিবেশগত ঝুঁকির ফলে পরবর্তী বছরগুলোতে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ভিত্তি বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পাবে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিম্নমুখী হয়ে ২০১৭ অর্থবছরের প্রায় ৭.২ শতাংশ থেকে ২০৪১ অর্থবছরে এমনকি ৫.৬ শতাংশে নেমে যেতে পারে। মূলধন মজুত এবং জলবায়ু সংবেদনশীল খাতসমূহের সম্ভাব্য উত্পাদন হ্রাস পাওয়ার কারণে মাথাপিছু আয় ২০৪১ অর্থবছরে মাত্র ১০,৫৪০ ইউএস ডলারে পৌঁছাবে, যা ব-দ্বীপ পরিকল্পনা গ্রহণের ফলে ১৪,৩৭৭ ইউএস ডলারের চেয়ে ৩,৮৩৭ ইউএস ডলার কম হবে এবং নিম্নমুখী জিডিপি প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান চাহিদা এবং দারিদ্র্য বিমোচনে নেতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ গ্রহণ না করলে বাংলাদেশের উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা এবং দারিদ্র্য নিরসনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন উভয়ই ব্যর্থ হতে পারে।
বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০-তে ২০৩০ সালের মধ্যে পানি ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাতে মোট দেশজ (জিডিপি) আয়ের ২.৫ শতাংশ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা বর্তমানে মোট দেশজ (জিডিপি) আয়ের ০.৮ শতাংশ। ধাপে ধাপে অর্থনৈতিক সক্ষমতা বিবেচনায় এ বরাদ্দ ২.৫ শতাংশে উন্নীত করা হবে। নতুন নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং বিদ্যমান অবকাঠামোর উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ বাস্তবায়নে প্রতিবছর এ পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হবে।
ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ এর ধারণা অনুযায়ী মোট দেশজ (জিডিপি) আয়ের ২.৫ শতাংশের মধ্যে ০.৫ শতাংশ অর্থায়ন বিভিন্ন উদ্যোগের আওতায় বেসরকারি খাত হতে এবং প্রায় ২.০ শতাংশ সরকারি খাত হতে নির্বাহ করতে হবে। সরকারি খাত হতে প্রাপ্ত ২.০ শতাংশ মোট দেশজ আয়ের মধ্যে প্রায় ০.৫ শতাংশ রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করার পর অবশিষ্ট মোট দেশজ আয়ের ১.৫ শতাংশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ বিনিয়োগ পরিকল্পনার আওতায় ব্যয় করা হবে। উল্লেখ্য, বর্তমানে রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা খাত খুব অবহেলিত এবং এ ব্যয়ের প্রকৃত পরিমাণও দেশজ আয়ের ০.১ শতাংশের বেশি হবে না। ব-দ্বীপ পরিকল্পনায় রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা খাতে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ না করা হলে পানিসম্পদ খাতে বিদ্যমান অবকাঠামোর স্থায়িত্বের দ্রুত অবনতি ঘটবে এবং পরবর্তীতে এ সকল অবকাঠামো অধিক ব্যয়ে পুনঃনির্মাণ করতে হবে। অর্থায়নের উত্স হিসেবে বাংলাদেশ সরকার, উন্নয়ন সহযোগী, পরিবেশ এবং জলবায়ু সম্পর্কিত তহবিল বিশেষ করে Green Climate Fund (‰CF), সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি), প্রভৃতিকে বিবেচনা করা হয়েছে। অর্থায়নের ক্ষেত্রে Cost recovery-র জন্য ক্রমান্ব্বয়ে Beneficiary Pay Principle, Polluter Pay Principle নীতি বাস্তবায়ন করা হবে।
বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০-তে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত বিষয়ের অন্যতম হলো ‘আন্তঃদেশীয় নদী ব্যবস্থাপনা’। এ অধ্যায়ে উজানের নদীসমূহে পানি ব্যবহারের বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে সে অনুযায়ী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। উজানের পানি প্রবাহের বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় রেখে সংশ্লিষ্ট দেশের সাথে সমঝোতার ভিত্তিতে উপযুক্ত স্থান নির্বাচনপূর্বক প্রয়োজনে দেশের অভ্যন্তরে সম্ভাব্য বাঁধ বা ব্যারেজ নির্মাণের বিষয় বিবেচনা; পানিসংক্রান্ত কূটনীতির মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা সমাধান এবং সংঘাত প্রতিরোধ; তিস্তাসহ অন্যান্য সকল আন্তঃদেশীয় নদীর পানি বন্টন সংক্রান্ত চুক্তি সম্পাদন তত্পরতা অব্যাহত রাখা; চাহিদাভিত্তিক যৌথ নদী অববাহিকা ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা গ্রহণ; পানিসংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনে তৃতীয় পক্ষকে (বহুপক্ষীয় বা দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা বা দেশ) সম্পৃক্তকরণ; অববাহিকাভিত্তিক বন্যা পূর্বাভাস পদ্ধতির উন্নয়ন; এবং পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমঝোতার মাধ্যমে উজানের নদীসমূহের বিস্তর তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ এবং তা বিচার বিশ্লেষণের মত বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এ পরিকল্পনায় ‘ব-দ্বীপ বিষয়ক জ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা কাঠামো’ গড়ে তোলার বিধান রাখা হয়েছে। এর ফলে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে লব্ধ ডেল্টা সম্পর্কিত প্রাসঙ্গিক জ্ঞান সংকলন করে একটি ডিজিটাল নলেজ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা; ডেল্টা উপাত্ত ব্যাংক স্থাপন, সমন্বিত ডেল্টাবিষয়ক জ্ঞান এবং উপাত্ত সংগ্রহ, হালনাগাদকরণ এবং প্রয়োগ ইত্যাদি বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ মহাপরিকল্পনায় নদী খনন ও শীতকালের জন্য বর্ষা মৌসুম শেষে পানি সংরক্ষণাধার তৈরির ব্যাপক প্রচেষ্টার কথা বলা হয়েছে।
সদ্য অনুমোদিত ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ একটি অভিযোজী এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হওয়ায় এটিকে দেশের পরিকল্পনা প্রক্রিয়ার সাথে সমন্বিত করা হবে। এ পরিকল্পনা সময়ে সময়ে এবং নিয়মিতভাবে পর্যালোচনা ও হালনাগাদ করা হবে এবং পরবর্তী পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাসমূহে তার প্রতিফলন থাকবে। এ পরিকল্পনার আরো সমৃদ্ধির জন্য তাতে নতুন জ্ঞান এবং প্রযুক্তির সমাবেশ ঘটানো হবে। ভবিষ্যতে এর সুষ্ঠু বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন হবে প্রতিনিয়ত পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন।
বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’র সফল বাস্তবায়নে দৃঢ়, সমন্বিত ও সময়ের সাথে পরিবর্তনশীল কার্যকরী কৌশল অবলম্বন এবং পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় ন্যায়সঙ্গত সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে দেশের নদী ও পানিসম্পদের সর্বোচ্চ ও যথোপযুক্ত ব্যবহার; সমন্বিত ও টেকসই নদী ও নদীর মোহনা গড়ে তোলা; খাদ্য নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও পরিবেশগত স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জলবায়ু পরিবর্তন অভিঘাত এবং অন্যান্য ব-দ্বীপ সমস্যা মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।
লেখক : সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব), সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ, বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশন।



লাইফের বিভিন্ন বিষয় জানতে, শিখতে ও উপদেশ-পরামর্শ পেতে ভিজিট করুন Life Magazine ব্লগ।
ওয়েব অ্যাড্রেস/ লিংক/ URL:

নিয়মিত আমাদের আপডেট পেতে লাইক দিন 'লাইফ ম্যাগাজিন' এর ফেসবুক পেজে। ফেসবুক পেজের লিংক→

জানুন ও শিখুন জীবনের অনেক কিছু.../
মেহেদী হাসান,
সম্পাদক, লাইফ ম্যাগাজিন।


Saturday, November 17, 2018

কনসার্ট ফর বাংলাদেশ সম্পর্কিত কিছু তথ্য

তথ্যপত্র


তথ্যসমূহ:—
১. 'বিটলস' ব্যান্ডের অন্যতম গায়ক এবং ''১৯৭১ এর ১আগস্ট নিউইয়র্কের 'ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেন' এর কনসার্ট ফর বাংলাদেশ" এর প্রধান গায়ক ছিলেন জর্জ হ্যরিসন।
২. কনসার্টে গাওয়া তার শেষ গান ছিল 'বাংলাদেশ বাংলাদেশ'।
৩. একাত্তরে বাংলাদেশে গণহত্যা, ধ্বংস আর হানাহানি বিপর্যস্ত করে তুলেছিল 'কনসার্ট ফর বাংলাদেশ' এর গায়ক রবিশঙ্করকে।
৪. 'বব ডিলান' ছিলেন কনসার্ট ফর বাংলাদেশ এর একজন গায়ক।
৫. 'ইমাজিন' নামক বিখ্যাত গানটির শিল্পী 'জন লেনন'; তিনি কনসার্ট ফর বাংলাদেশ এ থাকতে পারেন নি।
৬. জর্জ কীভাবে 'কনসার্ট ফর বাংলাদেশ' এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তা তিনি লিখেছেন তার নিজের আত্নজীবনী গ্রন্থ 'আই মি মাইন' তে।
৭. সেই সময়ে জর্জ তার 'রাগা' এ্যালবামের কাজ করছিলেন।
৮. জর্জ এই কনসার্টে ৮টি গান গেয়েছিলেন। এর একটি ছিল বব ডিলান এর সঙ্গে।
৯. বব ডিলান ৫টি গান গেয়েছিলেন।
১০. কনসার্টের শেষ পরিবেশনা ছিল জর্জ এর 'বাংলাদেশ বাংলাদেশ'। গানটি তিনি নিজেই লিখেছেন ও সুর করেছেন।
১১. ২০০৫ সালে নতুন করে প্রকাশিত হয়েছে " দ্যা কনসার্ট ফর বাংলাদেশ" এর এ্যালবামের ভিডিও।
১২. কনসার্ট ফর বাংলাদেশ এর ডিভিডি বিক্রির অর্থ জমা হয় "জর্জ হ্যরিসন ফান্ড ফর ইউনিসেফ" এ।
১৩. জর্জ হ্যারিসন এর স্ত্রী অলিভিয়া প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফর করেন ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০০৫ তে।
১৪. এই কনসার্টে ৪০ হাজার দর্শক উপস্থিত ছিল।
১৫. জর্জ হ্যারিসন ভারতীয় সেতারবাদক রবিশঙ্কর এর আমন্ত্রণে এই কনসার্ট এর আয়োজন করেন তাই তাঁরা দুইজন ছিলেন এর প্রধান উদ্যোক্তা।
১৬. 'ওই একদিনে পুরো বিশ্ব বাংলাদেশের নাম জেনে গিয়েছিল'— কনসার্ট ফর বাংলাদেশ সম্পর্কে একথা বলেছিলেন 'রবিশঙ্কর'।
১৭. বব ডিলান ২০১৬ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান।



Preface to Education Paper

শিক্ষাপত্র


বিভিন্ন অধ্যয়নমূলক তথ্য জানতে ও অধ্যয়ন করতে আমাদের এ ব্লগের সাথে থাকুন।

নিয়মিত আপডেট পেতে লাইক দিন ফেসবুক পেজে। ফেসবুক পেজের লিংক→
facebook.com/educationpapers

মধুর হোক অধ্যয়ন, জ্ঞান হোক মুক্ত.../
মেহেদী হাসান,
এডমিন ও সম্পাদক, এডুকেশন পেপার।